ইতালি প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে

ইতালি টি -টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ! ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৪টি দেশ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। ২০২৬ সালের আসরে প্রথমবারের মতো এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে ইতালি, যা হবে বিশ্বকাপের ২৫তম দল।

ইতালি ক্রিকেট বিশ্বকাপে নতুন করে জায়গা করে নিয়েছে । ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করেছে দলটি। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্বের শেষ দিনে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েছে ইতালি।

আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটি অনুষ্ঠিত হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজনে। ইতোমধ্যে ইউরোপ অঞ্চল থেকে নেদারল্যান্ডসও মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ১৫টি দেশ এই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে।

ইউরোপ অঞ্চল থেকে দুটি দল বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে এই বাছাইয়ের মাধ্যমে। নেদারল্যান্ডসের মাটিতে এক সপ্তাহব্যাপী চলা এই প্রতিযোগিতায় পাঁচটি দেশ অংশ নেয়-নেদারল্যান্ডস, ইতালি, স্কটল্যান্ড, জার্সি ও গার্নসি। শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়ে ৯ উইকেটে হেরে যায় ইতালি। ১৩৪ রানের লক্ষ্য তারা করে ডাচরা মাত্র ২০ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে।

তবে বড় ব্যবধানে হারলেও ইতালি রান রেটের ভিত্তিতে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে এবং বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পায়। এই বাছাইপর্বে নেদারল্যান্ডস ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে, আর ইতালি ও জার্সি দু’টি দলই ৫ পয়েন্ট করে অর্জন করে। কিন্তু ইতালির নেট রান রেট ছিল +০.৬১২, যা জার্সির +০.৩০৬ রান রেটের চেয়ে বেশি হওয়ায় এগিয়ে যায় ইতালি।

২০০৭ সালে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ২৪টি দেশ অংশ নিয়েছে। ২০২৬ আসরে ইতালি হতে যাচ্ছে ২৫তম দল। আগামী বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে ইউরোপ অঞ্চল থেকে মোট চারটি দেশ খেলবে। এর মধ্যে ইংল্যান্ড পূর্ববর্তী আসরের পারফরম্যান্স ও আয়ারল্যান্ড র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে আগে থেকেই কোয়ালিফাই করে রেখেছে।

আরও পড়ুন   লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ভ্রমণ । সহজেই একদিনের ট্যুর পরিকল্পনা করুন

ইতালি ও নেদারল্যান্ডসের আগেই আমেরিকা অঞ্চল থেকে কানাডা ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। এখনো বাকি পাঁচটি দলের বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হবে। আফ্রিকা অঞ্চল থেকে সেপ্টেম্বরে ও অক্টোবরের মধ্যে জিম্বাবুয়েতে হবে বাছাইপর্ব, যেখানে দুটি দল বিশ্বকাপে উঠবে। পাশাপাশি এশিয়া ও পূর্ব এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বাছাই হবে অক্টোবর মাসে ওমানে, যেখান থেকে আরও তিনটি দল বিশ্বকাপে সুযোগ পাবে।

ইতালি প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মূল পর্বে পা রাখছে । দলটি ১৯৯৫ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্যপদ লাভ করলেও গত দশক থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত খেলছে। বর্তমানে আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ২৮তম স্থানে থাকা ইতালিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জো বার্নস, যিনি এর আগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন।

এক নজরে

শুরুর সময়কাল:

  • ইতালিতে ক্রিকেটের প্রচলন হয় ১৮২০এর দশকে, ব্রিটিশ অভিবাসীদের মাধ্যমে।
  • ১৮৫১ সালে ইতালিতে প্রথম সংগঠিত ক্রিকেট ম্যাচ খেলা হয়।
  • তবে এই খেলা বেশিরভাগ সময়ই অভিবাসী ব্রিটিশ কমিউনিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি:

  • ১৯৮৪ সালে ইতালি আইসিসির অ্যাসোসিয়েট সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
  • ১৯৯৫ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্য হয় এবং পরে আবার অ্যাসোসিয়েট স্ট্যাটাসে উন্নীত হয়।

জাতীয় দলের অগ্রগতি:

  • ইতালি জাতীয় ক্রিকেট দল ১৯৯৬ সাল থেকে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও বিভিন্ন আইসিসি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে।
  • দলটি মূলত গঠিত হয় স্থানীয় খেলোয়াড়ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ থেকে অভিবাসিত খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে।
  • ২০১৩ সালে ইতালি আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগ ডিভিশন পর্যন্ত উন্নীত হয়েছিল।

টিটোয়েন্টি সাম্প্রতিক অগ্রগতি:

  • ২০১৯ সাল থেকে আইসিসি সব সহযোগী সদস্য দেশকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার অনুমতি দেয়।
  • এরপর থেকেই ইতালি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা শুরু করে।
  • বর্তমানে (২০২৫ সালের তথ্য অনুযায়ী) তারা আইসিসি টিটোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ২৮তম স্থানে রয়েছে।

বিশ্বকাপে প্রথমবার প্রবেশ (২০২৬):

  • ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো মূলপর্বে অংশ নিতে যাচ্ছে ইতালি।
  • এটি দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্বে ভালো পারফরম্যান্সের মাধ্যমেই অর্জিত।
আরও পড়ুন  ইতালি ভিসা খরচ 2025। যেতে চান স্বপ্নের দেশে

বর্তমান অধিনায়ক দলে অভিজ্ঞতা:

  • জো বার্নস, যিনি আগে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় টেস্ট দলে খেলেছেন, বর্তমানে ইতালির অধিনায়ক।
  • এ ছাড়া আরও কিছু অভিজ্ঞ বিদেশি পটভূমি থেকে আসা খেলোয়াড় ইতালির দলে নিয়মিত।

চ্যালেঞ্জ সম্ভাবনা:

  • ইতালিতে ক্রিকেট এখনো ফুটবল বা রাগবির মতো জনপ্রিয় নয়।
  • তবে অভিবাসী কমিউনিটি, বিশেষ করে পাকিস্তানি, শ্রীলঙ্কান ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে ক্রিকেট আগ্রহ বাড়াচ্ছে।
  • ভবিষ্যতে ঘরোয়া অবকাঠামো ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে ইতালি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে।

Leave a Comment